ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের অধীনস্থ একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান। ১৯৮২ সালে ফায়ার সার্ভিস পরিদপ্তর, সিভিল ডিফেন্স পরিদপ্তর এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের উদ্ধার পরিদপ্তরের সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় বর্তমান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন এ প্রতিষ্ঠানটি গতি, সেবা ও তাগের মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত। প্রথম সাড়া প্রদানকারী সংস্থা( First Responder Organization) হিসেবে এ বিভাগের কর্মীরা অগ্নি নির্বাপণ, অগ্নি প্রতিরোধ, উদ্ধার, আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান, মুমূর্ষু রোগীদের হাসপাতালে প্রেরণ ও দেশী-বিদেশী ভিআইপিদের অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করে থাকে। প্রাকৃতিক ও মানব সৃষ্ট যে কোন দুর্যোগে এ বিভাগের অগ্নি সেনারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানব সেবায় সদা নিয়োজিত।
অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইন-২০০৩
Fire Service Ordinance-1959 রহিত করে ২০০৩ সনে প্রণীত অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইন-২০০৩ এবং ফায়ার সার্ভিস বিধিমালা ১৯৬১ দ্বারা বর্তমানে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সকল কার্যক্রম পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে।
আমাদের দায়িত্ব/সেবাসমূহঃ
অগ্নি প্রতিরোধমূলক মহড়া, পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ সেবাঃ
১) উক্ত সেবা গ্রহনের জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বা সরাসরি মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করতে হবে।
২) আবেদন প্রাপ্তির পর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে অত্র অধিদপ্তর আর্থিক সংশ্লিষ্ট ও অন্যান্য শর্তাবলীসহ প্যাকেজ প্রস্তাব প্রেরণ করে।
৩) সশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান উক্ত শর্তপালনে সহমত হলে অত্র অধিদপ্তর মনোনীত কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠাণের সহিত প্রয়োজনীয় সমন্বয়সাধন পূর্বক নিম্নলিখিত সেবা প্রদান করে থাকেঃ
(ক) অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপন বিষয়ে পরামর্শ প্রদান।
(খ) অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান।
(গ) অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপন বিষয়ে মহড়া পরিচালনা।
ফায়ার লাইসেন্স (অগ্নি- দূর্ঘটনা প্রতিরোধমূলক পরার্মশ সেবাঃ)
1) স্থানীয় সহকারী পরিচালক /উপ-পরিচালক বরাবর ফায়ার সার্ভিসের নির্ধারিত ফমর পূরণপূর্বক নিম্নবর্ণিত কাগজপত্রসহ আবেদন করতে হবে।
(ক) ট্রেড লাইসেন্স।
(খ) প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ভবনে ব্যবসা পরিচালনা হলে পৌরসভা কর্তৃক প্রতিষ্ঠানের স্থাববর/ অস্থাবরসম্পত্তির বার্ষিক মূল্যায়ন পত্র।
(গ) ভাড়া বাড়ীতে ব্যবসা হলে ভাড়ার চুক্তিপত্র।
(ঘ) রাজউক/ পৌরসভা কর্তৃক অনুমোদিত স্থাপনার নকশা।
(ঙ) প্রতিষ্ঠানটি লিমিটেড কোম্পাণী হলে Memorandum of Articles(Certification of Incorporation)
(চ) প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কর্তৃক অনাপত্তি সদন।
(ছ) বহুতল বা বাণিজ্যিক ভবন হলে ফয়ার সার্ভিসের ছাড়পত্র।
(জ) গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিস নির্ধারিত তথ্য বিবরণী।
2) আবেদন প্রাপ্তির পর 07 (সাত) কর্মদিবসের মধ্যে অধিদপ্তর কর্তৃক নিয়োজিত পরিদর্শকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট পরিদর্শন করা হয়।
3) পরিদর্শনের পর অগ্নি প্রতিরোধমূলক পরার্মশ প্রদান করা হয়।
4) পরার্মশ মোতাবেক কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করার পর পূণরায় পরিদর্শন করা হয়।
5) পরিদর্শন যুক্তিসঙ্গতভাবে সন্তোষজনক হলে সর্বোচ্চ 90 (নব্বই) দিনের মধ্যে লাইসেন্স প্রদান করা হয়।
6) যুক্তিসঙ্গত কারণে লাইসেন্স প্রদানের বিষয়ে সন্তুষ্ট না হলে মহাপরিচালক লাইসেন্সের আবেদন প্রাপ্তির 120 (একশত বিশ) দিনের মধ্যে আবেদনকারীকে শুনানীর সুযোগ প্রদান করবেন।
7) মহাপরিচালকের নিকট হতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কমকর্তার কোন সিদ্ধান্তে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সংক্ষুব্ধ হলে 30 (ত্রিশ) দিনের মধ্যে বিষয়টি পূণঃ বিবেচনার জন্য মহাপরিচালকের নিকট আবেদন করবেন।
8) উক্ত আবেদন প্রাপ্তির 30 (ত্রিশ) দিনের মধ্যে মহাপরিচালক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
9) উক্ত বিষয়ে মহাপরিচালকের সিদ্ধান্তে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত ফি প্রদান সাপেক্ষে সরকারের নিকট আপীল করতে পারবেন।
10) আপীল প্রাপ্তির 30 (ত্রিশ) দিনের মধ্যে সরকার তৎসম্পর্কে চূড়ান্তে সিদ্ধান্ত প্রদান করবেন।
বহুতল বাণিজ্যিক ভবনের ছাড়পত্রঃ
1) অগ্নি প্রতিরোধ নির্বাপন আইন 2003 এর 7নং ধারা অনুসারে অনূধ 07 (সাত) তলা ভবনের বা বাণিজ্যিক ভবনের অগ্নি প্রতিরোধমূলক ছাড়পত্র প্রদান করা হয়।
২) স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বা সরকারি মহাপরিচলাক বরাবর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আবেদন করবেন।
3) আবেদনের সাথে ভবরেন নকশা ও দলিল প্রদান করবেন।
4) অতঃপর অত্র অধিদপ্তর কর্তৃক মনোননীত পরিদর্শক 07 (সাত) কর্মদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ভবন পরিদর্শন করেন।
5) পরিদর্শনের পর অগ্নি প্রতিরোধমূলক পরামর্শ প্রদান করা হয়।
6) পরামর্শ মোতাবেক কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করলে শর্তসাপেক্ষে পরবর্তী 07 (সাত) কর্মদিবসের মধ্যে ছাড়পত্র প্রদান করা হয়।
7) পরিদর্শন যুক্তিসঙ্গত কারণে সন্তোষজনক না হলে ভবন ব্যবহারের অনুপযোগী মর্মে মহাপরিচালক ঘোষণা করতে পারেন।
8) ভবন ব্যবহারের অনুপযোগী ঘোষণার কারণে কোন ব্যক্তি সংক্ষুব্ধ হলে তিনি উক্তরূপ ঘোষণার 30 (ত্রিশ) দিনের মধ্যে সরকারের নিকট আপীল করতে পারবেন।
9) উক্ত আপীল প্রাপ্তির 60 (ষাট) দিনের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসঃ
1) অত্র অধিদপ্তর স্থানীভাবে বা আন্তঃ জেলা পর্যায়ে রোগী পরিবহনের নিমিত্তে জনসাধারণের জন্য এ্যাম্বুলেন্স প্রাদান করে থাকে।
2) এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের আওতায় শুধুমাত্র রোগীকে বাসা থেকে হাসপাতালে অথবা দূর্ঘটনার স্থান থেকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
3) এ সেবার জন্য স্থানীয় পর্যায়ে বা পৌরৈ এলকায় ফোনের বা বার্তাবাহকের মাধ্যমে এ্যাম্বুলেন্স কল গ্রহণ করা হয়।
4) আন্তঃ জেলা পর্যায়ে বা দূরবর্তী কলের ক্ষেত্রে রোগী পরিবহনের জন্য নির্ধারিত ফরম পূরণপূর্বক পূর্ব অনুমোদন নিতে হয়।
5) রোগী পরিবহনের জন্য ভাড়ার হার নিম্নরূপঃ
(ক) দেশের সকল মেট্রেপলিটন শহর এলাকাসহ সকল পৌরএলাকায় 01 মাইল/1 কিলোমিটার হতে 5মাইল/8 কিলোমিটার পর্যন্ত50 (পঞ্চাশ) টাকা।
(খ) 5 মাইলের উর্ধ্বে হতে 10 মাইল অথবা 8 কিলোমিটার হতে 16 কিলোমিটার পর্যন্ত প্রতি কল 100 (একশত) টাকা ও প্রতি কিলোমিটার 9 (নয়) টাকা।
6) এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের আওতায় লাশ এবং সংক্রামক ব্যাধির রোগী বহন করা হয় না।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস